Skip to main content

Tawhid Hadith Bangla | তাওহীদ সম্পর্কে হাদিস, ও তাওহীদ সম্পর্কে আলোচনা

 তাওহীদ কি এবং তাওহীদ সম্পর্কে হাদিস  ও  তাওহীদ সম্পর্কে আলোচনা


( যেমন ) তাওহীদ কথার অর্থ কি, তাওহীদ কি, তাওহীদ কাকে বলে, রিসালাত কাকে বলে, তাওহীদ বিশ্বাস করা প্রয়োজন কেন, তাওহীদ এর গুরুত্ব, শিরক কাকে বলে, রিসালাত কাকে বলে, তাওহীদ এর গুরুত্ব, ঈমান কাকে বলে,তাওহীদে রুবুবিয়্যাহ কাকে বলে, তাওহীদের আয়াত

( ইত্যাদি নিয়ে মূল আলোচনা করাহবে ইনশা আল্লাহ ) 
( প্রশ্ন এবং উত্তর দেয়া হবে ইনশা আল্লাহ )


তাওহীদ সম্পর্কে হাদিস  ও  তাওহীদ সম্পর্কে আলোচনা

১: আপনার রব কে?

আমার রব হচ্ছেন আল্লাহ।

২: রব অর্থ কি?

( রব অর্থ ) রব দ্বারা উদ্দেশ্য, মালিক, সৃষ্টিকর্তা, রিযিক্বদাতা, নিয়ন্ত্রণকারী, আকৃতিদানকারী ও প্রতিপালনকারী। তাঁর অনুমতি ব্যতীত কিছুই হয় না এবং তাঁর অনুমতি ও ইচ্ছা ব্যতীত কোনো কিছু সামান্যতম নড়াচড়াও না।


তাওহীদ সম্পর্কে হাদিস  ও  তাওহীদ সম্পর্কে আলোচনা


(Rab means) the purpose, owner, creator, provider, controller, shaper, and nurturer by Rab. Nothing happens without His permission and nothing moves without His permission and will.

৩: আল্লাহ অর্থ কি?

( আল্লাহ অর্থ ) যাবতীয় ইবাদত এবং উপাসনা পাওয়ার যোগ্য একমাত্র সত্ত্বা-ই হচ্ছেন আল্লাহ।

৪: আল্লাহ কোথায়?

আমার প্রভু আল্লাহ উর্ধ্বে, আরশের উপরে আছেন। মহান আল্লাহ নিজের সম্পর্কে বলেন,

﴿ ٱلرَّحۡمَٰنُ عَلَى ٱلۡعَرۡشِ ٱسۡتَوَىٰ ٥ ﴾ [طه: ٥]

“পরম দয়াময় আল্লাহ আরশের উপর উঠেছেন” (ত্বা-হা ৫)। সত্যিকার অর্থেই আল্লাহ্‌র সত্ত্বার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমনভাবে তিনি আরশের উপর উঠেছেন; তাঁর আরশের উপর উঠার বিষয়টিকে কোনোরূপ পরিবর্তন-পরিবর্ধন করা যাবে না এবং এটির কল্পিত কোনো আকৃতি যেমন স্থির করা যাবে না, তেমনি কোনো সৃষ্টির সাথে এর কোনোরূপ সাদৃশ্য বিধানও করা চলবে না।

অতএব, আপনি কোনো অবস্থাতেই বলতে পারেন না যে, আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান। কেননা সর্বোচ্চে অবস্থান মহান আল্লাহ্‌র একটি প্রশংসনীয় বিশেষণ। আর সে কারণেই তো আমরা সেজদাতে বলে থাকি, ‘আমার প্রভু সর্বোচ্চ’। ইমামগণ একমত পোষণ করেছেন যে, মহান আল্লাহ যমীনে অবতরণ করেন না। যে ব্যক্তি এই আক্বীদা পোষণ করে যে, আল্লাহ তাঁর কোনো সৃষ্টির মধ্যে প্রবিষ্ট হন, সে ব্যক্তির কুফরীতে নিপতিত হওয়ার ব্যাপারেও তাঁরা একমত পোষণ করেছেন। বরং মহান আল্লাহ দুনিয়ার নিকটতম শেষ আসমানে এমনভাবে অবতরণ করেন, যেমন অবতরণ করা তাঁর মহত্ত্বের সাথে মানানসই। রাতের শেষাংশে আল্লাহ্‌র শেষ আসমানে অবতরণ এবং অবস্থানের ধরণ সম্পর্কে কেউ কিছুই জানে না। এই সময় তিনি বলেন,

«هَلْ مِنْ دَاعٍ فَأَسْتَجِيبَ لَهُ»

“কোনো প্রার্থনাকারী আছে কি? আমি তার প্রার্থনা মঞ্জুর করব” (বুখারী ও মুসলিম)।

কেউ প্রশ্ন করতে পারে, তাহলে নিম্নোক্ত আয়াতটির অর্থ কি?

﴿وَهُوَ مَعَكُمۡ أَيۡنَ مَا كُنتُمۡۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِيرٞ ٤ ﴾ [الحديد: ٤]

“তিনি তোমাদের সাথে আছেন, তোমরা যেখানেই থাক” (হাদীদ ৪)। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন। জবাবে বলব, এখানে সবার সঙ্গে থাকার অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ্‌র ইলম এবং শক্তি। কারণ তাঁর পবিত্র সত্ত্বা সর্বোচ্চ আরশে আছে; কিন্তু তাঁর জ্ঞান এবং শক্তি সবার সাথে আছে। কোনো কিছুই তাঁর শক্তি এবং জানার বাইরে নেই।

৫: আপনি কিভাবে আপনার প্রভুকে চিনেন?

আল্লাহ্‌র নানা নিদর্শন এবং তাঁর সৃষ্টিসমূহ দেখে আমি তাঁকে চিনি। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ وَمِنۡ ءَايَٰتِهِ ٱلَّيۡلُ وَٱلنَّهَارُ وَٱلشَّمۡسُ وَٱلۡقَمَرُۚ ﴾ [فصلت: ٣٧]

“তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে রাত, দিন, সূর্য ও চন্দ্র” (ফুছসালাত ৩৭)।

তাঁর সৃষ্টিসমূহের মধ্যে সাত আসমান, সাত যমীন এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু অন্যতম। এরশাদ হচ্ছে,

﴿ إِنَّ رَبَّكُمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٖ ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰ عَلَى ٱلۡعَرۡشِۖ يُغۡشِي ٱلَّيۡلَ ٱلنَّهَارَ يَطۡلُبُهُۥ حَثِيثٗا وَٱلشَّمۡسَ وَٱلۡقَمَرَ وَٱلنُّجُومَ مُسَخَّرَٰتِۢ بِأَمۡرِهِۦٓۗ أَلَا لَهُ ٱلۡخَلۡقُ وَٱلۡأَمۡرُۗ تَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٥٤ ﴾ [الاعراف: ٥٤]

“নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর আরোহন করেছেন। তিনি রাতের ভেতর দিনকে প্রবেশ করান এমনভাবে যে, দিন দৌড়ে রাতের পেছনে আসে। তিনি সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি সৃষ্টি করেছেন; সেগুলি তাঁর আদেশের অনুগামী। জেনে রেখো, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ বরকতময়” (আ‘রাফ ৫৪)।

৬: আল্লাহ আপনাকে কেন সৃষ্টি করেছেন?

সর্ব প্রকার শির্ক বর্জন করে যাবতীয় ইবাদত কেবলমাত্র তাঁর উদ্দেশ্যে সম্পাদন এবং তাঁর আদিষ্ট বিষয়সমূহের বাস্তবায়ন ও নিষিদ্ধ বিষয়সমূহকে পরিত্যাগের মাধ্যমে তাঁর আনুগত্যের জন্যই তিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। এরশাদ হচ্ছে,

﴿وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦﴾ [الذاريات: ٥٦] “শুধুমাত্র আমার ইবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি” (যারিয়াত ৫৬)।

অন্যত্র ঘোষিত হয়েছে,

﴿۞وَٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَلَا تُشۡرِكُواْ بِهِۦ شَيۡ‍ٔٗاۖ﴾ [النساء: ٣٦]

“আর তোমরা আল্লাহ্‌র ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না” (নিসা ৩৬)।


৭: আল্লাহ্‌র নিকট সবচেয়ে বড় পাপ কোন্‌টি?

যে গুনাহ দিয়ে আল্লাহ্‌র নাফরমানি করা হয়, তার সবচেয়ে বড়টি হচ্ছে, শির্ক। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ لَقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡمَسِيحُ ٱبۡنُ مَرۡيَمَۖ وَقَالَ ٱلۡمَسِيحُ يَٰبَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ رَبِّي وَرَبَّكُمۡۖ إِنَّهُۥ مَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ أَنصَارٖ ٧٢ ﴾ [المائ‍دة: ٧٢]

“যারা বলে যে, মারিয়াম-তনয় মাসীহ-ই আল্লাহ, তারা কাফের। অথচ মাসীহ বলেন, হে বনী ইসরাঈল! তোমরা আমার পালনকর্তা এবং তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ্‌র ইবাদত কর। নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে শির্ক করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন; তার বাসস্থান হচ্ছে জাহান্নাম। আর অত্যাচারীদের কোনো সাহায্যকারী নেই” (মায়েদাহ ৭২)।

আর শির্ক হচ্ছে, আল্লাহ্‌র সমকক্ষ সাব্যস্ত করা, চাই তা হোক কোনো বাদশাহ, কিংবা নবী-রাসূল বা কোনো অলী। আল্লাহ ব্যতীত অথবা আল্লাহ্‌র সাথে তাকে ডাকা, বা তাকে ভয় করা বা তার উপর ভরসা করা বা তার কাছে কোনো কিছু চাওয়া অথবা অন্য কোনো ইবাদত তার জন্য সম্পাদন করা।

৮: ইবাদত অর্থ কি?

আল্লাহ ভালবাসেন এবং সন্তুষ্ট হন প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য এমন যাবতীয় কথা ও কাজকে ইবাদত বলে। যেমনঃ দো‘আ করা। আল্লাহ বলেন,

﴿ وَأَنَّ ٱلۡمَسَٰجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدۡعُواْ مَعَ ٱللَّهِ أَحَدٗا ١٨ ﴾ [الجن: ١٨] 

“আর (এই অহিও করা হয়েছে যে,) মসজিদসমূহ আল্লাহকে স্মরণ করার জন্য। অতএব, তোমরা আল্লাহ্‌র সাথে কাউকে ডেকো না” (জিন ১৮)।

আর আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকলে যে কাফের হয়, তার প্রমাণ হচ্ছে,

﴿ وَمَن يَدۡعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ لَا بُرۡهَٰنَ لَهُۥ بِهِۦ فَإِنَّمَا حِسَابُهُۥ عِندَ رَبِّهِۦٓۚ إِنَّهُۥ لَا يُفۡلِحُ ٱلۡكَٰفِرُونَ ١١٧ ﴾ [المؤمنون: ١١٧]

“যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে অন্য উপাস্যকে ডাকে, যে ডাকার পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই, তার হিসাব তো তার পালনকর্তার কাছেই। নিশ্চয়ই কাফেররা সফলকাম হবে না” (মুমিনূন ১১৭)।

৯: দো‘আ কি ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত?

দো‘আ শুধু ইবাদতের অন্তর্ভুক্তই নয়, বরং তা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতসমূহের অন্যতম। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ وَقَالَ رَبُّكُمُ ٱدۡعُونِيٓ أَسۡتَجِبۡ لَكُمۡۚ إِنَّ ٱلَّذِينَ يَسۡتَكۡبِرُونَ عَنۡ عِبَادَتِي سَيَدۡخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ ٦٠ ﴾ [غافر: ٦٠]

“আর তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। নিশ্চয়ই যারা আমার ইবাদতের ক্ষেত্রে অহংকার করে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে” (গাফির ৬০)।

তাছাড়া হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ

“দো‘আই হচ্ছে ইবাদত” (তিরমিযী, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে ‘সহীহ’ বলেছেন)।

১০: আল্লাহ তাঁর বান্দার উপর সর্বপ্রথম কোন্‌ বিষয়টি ফরয করেছেন?

আল্লাহ কর্তৃক তাঁর বান্দার প্রতি ফরযকৃত সর্বপ্রথম বিষয়টি হচ্ছে, আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা এবং তাগূতকে অস্বীকার করা। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ وَلَقَدۡ بَعَثۡنَا فِي كُلِّ أُمَّةٖ رَّسُولًا أَنِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ وَٱجۡتَنِبُواْ ٱلطَّٰغُوتَۖ فَمِنۡهُم مَّنۡ هَدَى ٱللَّهُ وَمِنۡهُم مَّنۡ حَقَّتۡ عَلَيۡهِ ٱلضَّلَٰلَةُۚ فَسِيرُواْ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَٱنظُرُواْ كَيۡفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلۡمُكَذِّبِينَ ٣٦ ﴾ [النحل: ٣٦]

“আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই নির্দেশ দিয়ে যে, তোমরা আল্লাহ্‌র ইবাদত কর এবং ত্বাগূত থেকে বেঁচে থাক। অতঃপর তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে আল্লাহ হেদায়াত করেছেন। পক্ষান্তরে কিছু সংখ্যকের জন্যে পথভ্রষ্টতা অবধারিত হয়ে গেছে। সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ, মিথ্যারোপকারীদের কিরূপ পরিণতি হয়েছে” (নাহ্‌ল ৩৬)।

আর ত্বাগুত হচ্ছে, বান্দা যাকে নিয়ে তার সীমা অতিক্রম করেছে। চাই তা উপাসনার মাধ্যমে হোক, বা অনুসৃত হওয়ার দিক থেকে হোক, অথবা আনুগত্যের ক্ষেত্রেই হোক[1]।

অথবা বলা যায়, আল্লাহ ছাড়া যার ইবাদত করা হয়, সে-ই হচ্ছে ত্বাগূত- যদি সে ঐ ইবাদতে রাযী-খুশী থাকে।


[1] অর্থাৎ কোনো কিছুকে তার সীমা অতিক্রম করে স্রষ্টার স্থানে পৌঁছে দেওয়া। সেটা কয়েকভাবে হতে পারে, সে বস্তুর ইবাদতের মাধ্যমে, অথবা সেটার অনুসরণের ক্ষেত্রে আল্লাহর অনুসরণের কাছে নিয়ে যাওয়া, অথবা সেটার আনুগত্য করার ক্ষেত্রে এমনভাবে আনুগত্য করা যে, সেটা আল্লাহর আনুগত্যের পর্যায়ে চলে যায়। তবে সে বস্তুটি তাগুত হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে সে ঐ ইবাদতে, কিংবা আনুগত্যে অথবা অনুসরণে রাযী-খুশী থাকা।


১১: আপনার দ্বীন কোন্‌টি?

আমার দ্বীন হচ্ছে, ইসলাম।

আর ‘ইসলাম’-এর অর্থ হচ্ছে, তাওহীদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আল্লাহ্‌র নিকট আত্মসমর্পণ করা, আনুগত্যের মাধ্যমে তাঁর নিকট নত হওয়া এবং শির্ক ও শির্কপন্থীদের থেকে নিজেকে মুক্ত করা। যেমন আল্লাহ বলেন,

﴿ إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلۡإِسۡلَٰمُۗ وَمَا ٱخۡتَلَفَ ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ إِلَّا مِنۢ بَعۡدِ مَا جَآءَهُمُ ٱلۡعِلۡمُ بَغۡيَۢا بَيۡنَهُمۡۗ وَمَن يَكۡفُرۡ بِ‍َٔايَٰتِ ٱللَّهِ فَإِنَّ ٱللَّهَ سَرِيعُ ٱلۡحِسَابِ ١٩ ﴾ [ال عمران: ١٩]

“নিঃসন্দেহে আল্লাহ্‌র নিকট একমাত্র গ্রহণযোগ্য দ্বীন হচ্ছে ইসলাম। আর যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছে, তাদের নিকট প্রকৃত জ্ঞান আসার পরও শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ তারা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে। যারা আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহের সাথে কুফরী করে, (তাদের জানা উচিৎ যে,) নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত দ্রুত” (আলে ইমরান ১৯)।

অন্যত্র এরশাদ হচ্ছে,

﴿ وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥ ﴾ [ال عمران: ٨٥]

“যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন তালাশ করে, কস্মিনকালেও তা তার পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে” (আলে ইমরান ৮৫)। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«الإِسْلاَمُ أَنْ تَشْهَدَ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَتُقِيمَ الصَّلاَةَ وَتُؤْتِىَ الزَّكَاةَ وَتَصُومَ رَمَضَانَ وَتَحُجَّ الْبَيْتَ إِنِ اسْتَطَعْتَ إِلَيْهِ سَبِيلاً»

“ইসলাম হচ্ছে একথা সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব মা‘বূদ নেই ও মুহাম্মাদ আল্লাহ্‌র রাসূল-একথার সাক্ষ্য দেওয়া, ছালাত ক্বায়েম করা, যাকাত দেওয়া, রামাযান মাসে ছিয়াম পালন করা এবং সামর্থ্য থাকলে কা‘বায় হজ্জ করা” (মুসলিম)।

১২: ‘আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো মা‘বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ্র রাসূল’- একথার সাক্ষ্য দেওয়ার অর্থ কি?

‘আল্লাহ ছাড়া কোনো মা‘বূদ নেই’-এর অর্থ হচ্ছে, لاَ مَعْبُوْدَ بِحَقٍّ إِلاَّ الله অর্থাৎ: ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব মা‘বূদ নেই’। এরশাদ হচ্ছে,

﴿ وَجَعَلَهَا كَلِمَةَۢ بَاقِيَةٗ فِي عَقِبِهِۦ لَعَلَّهُمۡ يَرۡجِعُونَ ٢٨ ﴾ [الزخرف: ٢٨]

“এ কথাটিকে তিনি (ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম) অক্ষয় বাণী রূপে তাঁর পরবর্তীদের মধ্যে রেখে গেছেন, যাতে তারা আল্লাহ্‌র দিকেই ফিরে যেতে পারে” (যুখরুখ ২৮)।

আর ‘মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহ্‌র রাসূল’-এর অর্থ হচ্ছে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ্‌র বান্দা ও রাসূল। তিনি আল্লাহ্‌র এমন একজন বান্দা, যার ইবাদত করা যাবে না এবং এমন একজন নবী, যাঁকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা যাবে না; বরং তাঁর নির্দেশিত বিষয়ে তাঁকে অনুসরণ করতে হবে, তাঁর থেকে বর্ণিত বিষয়সমূহকে সত্য প্রতিপন্ন করতে হবে এবং তাঁর নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকতে হবে। অনুরূপভাবে তাঁর নির্দেশিত পদ্ধতিতে আল্লাহ্‌র ইবাদত করতে হবে। সেজন্য তিনি সবধরনের বিদ‘আতকে নিষিদ্ধ করেছেন। ফলে ইসলামে ‘উত্তম বিদ‘আত’ বলতে কিছু নেই। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,

«إِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُورِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٌ»

“তোমরা শরী‘আতে নবাবিষ্কার থেকে বেঁচে থাকো। কেননা নবাবিষ্কৃত প্রত্যেকটা বস্তুই হচ্ছে বিদ‘আত এবং প্রত্যেকটি বিদ‘আতই হচ্ছে পথভ্রষ্টতা” (মুসনাদে আহমাদ)।

তিনি আরো বলেন,

«مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ»

“যে ব্যক্তি আমাদের নির্দেশের বাইরে কোনো আমল করলো, তার সেই আমল প্রত্যাখ্যাত” (মুসলিম)।

আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ أَحْدَثَ فِى أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ»

“যে ব্যক্তি আমাদের এই শরী‘আতে নতুন কিছু সৃষ্টি করল- যা তার অন্তর্ভুক্ত নয়, তবে তা প্রত্যাখ্যাত” (বুখারী ও মুসলিম)।

১৩: ছালাত, যাকাত, ছিয়াম এবং হজ্জ ফরয হওয়ার দলীল কি?

ছালাত এবং যাকাত ফরয হওয়ার দলীল হচ্ছে,

﴿ وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ وَيُقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤۡتُواْ ٱلزَّكَوٰةَۚ وَذَٰلِكَ دِينُ ٱلۡقَيِّمَةِ ٥ ﴾ [البينة: ٥]

“তাদেরকে কেবলমাত্র এই নির্দেশ করা হয়েছে যে, তারা খাঁটি বিশ্বাসের সাথে এবং একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ্‌র ইবাদত করবে, ছালাত কায়েম করবে এবং যাকাত আদায় করবে। এটিই সঠিক দ্বীন”। (বাইয়্যেনাহ ৫)। উক্ত আয়াতে সর্বপ্রথম তাওহীদ প্রতিষ্ঠা এবং শির্ক থেকে মুক্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেকারণে আল্লাহ্‌র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আদেশ হচ্ছে, তাওহীদ আর সবচেয়ে বড় নিষেধ হচ্ছে, শির্ক। অতঃপর আল্লাহ ছালাত প্রতিষ্ঠা এবং যাকাত প্রদানের আদেশ করেছেন।

আর ছিয়াম ফরয হওয়ার দলীল হচ্ছে, আল্লাহর বাণী,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣ أَيَّامٗا مَّعۡدُودَٰتٖۚ فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۚ وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدۡيَةٞ طَعَامُ مِسۡكِينٖۖ فَمَن تَطَوَّعَ خَيۡرٗا فَهُوَ خَيۡرٞ لَّهُۥۚ وَأَن تَصُومُواْ خَيۡرٞ لَّكُمۡ إِن كُنتُمۡ تَعۡلَمُونَ ١٨٤ شَهۡرُ رَمَضَانَ ٱلَّذِيٓ أُنزِلَ فِيهِ ٱلۡقُرۡءَانُ هُدٗى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَٰتٖ مِّنَ ٱلۡهُدَىٰ وَٱلۡفُرۡقَانِۚ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ ٱلشَّهۡرَ فَلۡيَصُمۡهُۖ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۗ يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلۡيُسۡرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلۡعُسۡرَ وَلِتُكۡمِلُواْ ٱلۡعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ ١٨٥ ﴾ [البقرة: ١٨٣، ١٨٥]

“হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেয়া হল, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে দেয়া হয়েছিল , যাতে তোমরা তাকওয়ার অধিকারী হতে পার। এগুলো গোনা কয়েক দিন। অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে । আর যাদের জন্য সিয়াম কষ্টসাধ্য তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদ্ইয়া- একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে তবে তা তার জন্য কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণের যদি তোমরা জানতে। রমাদান মাস, এতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হেদায়াতের জন্য এবং হিদায়াতের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে । তবে তোমাদের কেউ অসুস্থ থাকলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করবে । আল্লাহ্ তোমাদের জন্য সহজ চান এবং তোমাদের জন্য কষ্ট চান না। আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূর্ণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন সে জন্য তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।” [সূরা আল-বাকারাহ: ১৮৩-১৮৫]

আর হজ্জ ফরয হওয়ার দলীল হচ্ছে,

﴿فِيهِ ءَايَٰتُۢ بَيِّنَٰتٞ مَّقَامُ إِبۡرَٰهِيمَۖ وَمَن دَخَلَهُۥ كَانَ ءَامِنٗاۗ وَلِلَّهِ عَلَى ٱلنَّاسِ حِجُّ ٱلۡبَيۡتِ مَنِ ٱسۡتَطَاعَ إِلَيۡهِ سَبِيلٗاۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٩٧ ﴾ [ال عمران: ٩٧]

“আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে এ ঘরের হজ্জ করা মানুষের উপর ফরয, যার এ পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ্য রয়েছে। আর যে ব্যক্তি তা মানে না, (তার ক্ষেত্রে বক্তব্য হলো) আল্লাহ সৃষ্টিকুলের কোনো কিছুরই মুখাপেক্ষী নন” (আলে ইমরান ৯৭)।

১৪: নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দ্বীন ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম কি গৃহীত হবে?

মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দ্বীন ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম গৃহীত হবে না। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী,

﴿ وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥ ﴾ [ال عمران: ٨٥] 

“যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিনকালেও তা তার পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে” (আলে ইমরান ৮৫)।


১৫: ‘আন্তঃধর্মীয় ঐক্য (وحدة الأديان)’ মতবাদ জায়েয কি?


উক্ত মতবাদ জায়েয নয়। কেননা দ্বীন ইসলাম পরিপূর্ণ। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ٱلۡيَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِينَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَٰمَ دِينٗاۚ﴾ [المائ‍دة: ٣]

“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নে'মতসমূহ সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসাবে পছন্দ করলাম” (মায়েদাহ ৩)। অতএব, ইসলামের সাথে অন্য কোনো দ্বীনকে যুক্ত করার কোনোই প্রয়োজন নেই। তাছাড়া মহান আল্লাহ দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো দ্বীন কস্মিনকালেও গ্রহণ করবেন না। এর প্রমাণ হচ্ছে আল্লাহর বাণী,

﴿ وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ ٨٥ ﴾ [ال عمران: ٨٥]

“যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিনকালেও তা তার পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে” (আলে ইমরান ৮৫)। তাছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«وَالَّذِى نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ يَسْمَعُ بِى أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الأُمَّةِ يَهُودِىٌّ وَلاَ نَصْرَانِىٌّ ثُمَّ يَمُوتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالَّذِى أُرْسِلْتُ بِهِ إِلاَّ كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ»

“মুহাম্মাদের জীবন যে সত্ত্বার হাতে, তার কসম করে বলছি, এই উম্মতের যে কেউ ইয়াহূদী হোক বা নাছারা হোক আমার কথা শোনে অথচ আমার রিসালাতের প্রতি ঈমান না আনা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, সে হবে জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত” (মুসলিম)।


১৬: ঈমানের রুকন কয়টি ও কি কি?

ঈমানের রুকন ৬টি। সেগুলি হচ্ছে, আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান, তাঁর ফেরেশতামণ্ডলীর প্রতি ঈমান, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান, তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান, আখেরাতের প্রতি ঈমান এবং তাক্বদীরের ভাল-মন্দের প্রতি ঈমান। কুরআনুল কারীম এবং সহীহ হাদীসের বক্তব্য অনুযায়ী উক্ত রুকনসমূহের প্রত্যেকটির প্রতি ঈমান না আনা পর্যন্ত কারো ঈমান পূর্ণ হবে না। যে ব্যক্তি এগুলির কোনো একটিকে অস্বীকার করবে, সে ঈমানের গণ্ডি থেকে বের হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ ءَامَنَ ٱلرَّسُولُ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيۡهِ مِن رَّبِّهِۦ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَۚ كُلٌّ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَمَلَٰٓئِكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ لَا نُفَرِّقُ بَيۡنَ أَحَدٖ مِّن رُّسُلِهِۦۚ وَقَالُواْ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۖ غُفۡرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيۡكَ ٱلۡمَصِيرُ ٢٨٥ ﴾ [البقرة: ٢٨٥]

“রাসূলের নিকট তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যে অহি অবতীর্ণ হয়েছে, তাকে তিনি এবং মুমিনগণ মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেছেন। তাঁরা সবাই ঈমান এনেছেন আল্লাহ্‌র প্রতি, তাঁর ফেরেশতামণ্ডলীর প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি। (তাঁরা বলে,) আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোন তারতম্য করি না। তাঁরা বলে, আমরা শুনেছি এবং মেনে নিয়েছি। হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা আপনার কাছে ক্ষমা চাই এবং আপনারই নিকট প্রত্যাবর্তন করতে হবে” (বাক্বারাহ ২৮৫)।

তাছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ঈমান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,

«أَنْ تُؤْمِنَ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَتُؤْمِنَ بِالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ»

“ঈমান হচ্ছে, আল্লাহ্‌র প্রতি, তাঁর ফেরেশতামণ্ডলীর প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণের প্রতি এবং তাক্বদীরের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা” (মুসলিম)।

১৭: ঈমানের এই ৬টি মূলনীতির দাবী কি?

আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমানের দাবী হচ্ছে, তিনি আরশের উপর আছেন তার স্বীকৃতি দিতে হবে। তাঁর রুবূবিইয়াত, উলূহিইয়াত এবং সুন্দরতম নামসমূহ ও গুণাবলীরও স্বীকৃতি দিতে হবে। ফেরেশতামণ্ডলীর প্রতি ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে, তাঁদের বিদ্যমানতা এবং নানাবিধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিশ্বাস পোষণ করা। কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে, এই বিশ্বাস করতে হবে যে, আল্লাহ তাঁর রাসূলগণের উপর আসমানী কিতাবসমূহ অবতীর্ণ করেছেন। যেমনঃ তাওরাত, ইঞ্জীল, যাবূর, ছুহুফে ইবরাহীম এবং কুরআন। আমাদেরকে আরো বিশ্বাস করতে হবে যে, কুরআন ব্যতীত অন্যান্য মৌলিক আসমানী কিতাবসমূহে পরিবর্তন-পরিবর্ধন সাধিত হয়েছে। রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে, আমাদেরকে এই বিশ্বাস করতে হবে যে, আল্লাহ মানব জাতির হেদায়াতের জন্য অনেক রাসূল প্রেরণ করেছেন, আল-কুরআনুল কারীমে তাঁদের অনেকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বপ্রথম রাসূল হলেন, নূহ আলাইহিস সালাম এবং সর্বশেষ ও সর্বোত্তম হচ্ছেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আখেরাতের প্রতি ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে, আখেরাতের হিসাব-নিক্বাশ, প্রতিদান, জান্নাত-জাহান্নাম এবং এই দিন সম্পর্কে কুরআন-হাদীসের বক্তব্যের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। আর তাক্বদীরের প্রতি ঈমান আনার অর্থ হচ্ছে, আমাদেরকে এই বিশ্বাস করতে হবে যে, সবকিছুকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, সেগুলি সৃষ্টি হওয়ার আগেই তিনি সে সম্পর্কে জ্ঞান রাখতেন, তিনি তা লাওহে মাহফূযে লিখে রেখেছেন এবং সবকিছু তাঁর ইচ্ছাতেই সংঘটিত হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ إِنَّا كُلَّ شَيۡءٍ خَلَقۡنَٰهُ بِقَدَرٖ ٤٩ ﴾ [القمر: ٤٩]

“নিশ্চয় প্রত্যেকটি জিনিসকে আমরা পরিমিতরূপে সৃষ্টি করেছি” (আল-ক্বামার ৪৯)। অন্যত্র এসেছে,

﴿ ۞وَعِندَهُۥ مَفَاتِحُ ٱلۡغَيۡبِ لَا يَعۡلَمُهَآ إِلَّا هُوَۚ وَيَعۡلَمُ مَا فِي ٱلۡبَرِّ وَٱلۡبَحۡرِۚ وَمَا تَسۡقُطُ مِن وَرَقَةٍ إِلَّا يَعۡلَمُهَا وَلَا حَبَّةٖ فِي ظُلُمَٰتِ ٱلۡأَرۡضِ وَلَا رَطۡبٖ وَلَا يَابِسٍ إِلَّا فِي كِتَٰبٖ مُّبِينٖ ٥٩ ﴾ [الانعام: ٥٩]

“তাঁর কাছেই গায়েবী জগতের চাবি রয়েছে; এগুলি তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা কিছু আছে, তিনিই জানেন। তাঁর জানার বাইরে (গাছের) কোন পাতাও ঝরে না। তাক্বদীরের লিখন ব্যতীত কোন শস্যকণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুষ্ক দ্রব্যও পতিত হয় না” (আন‘আম ৫৯)। মহান আল্লাহ আরো বলেন,

﴿ أَلَمۡ تَعۡلَمۡ أَنَّ ٱللَّهَ يَعۡلَمُ مَا فِي ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِۚ إِنَّ ذَٰلِكَ فِي كِتَٰبٍۚ إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى ٱللَّهِ يَسِيرٞ ٧٠ ﴾ [الحج: ٧٠]

“তুমি কি জানো না যে, আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে, সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবগত। এসবই কিতাবে লিখিত আছে। নিশ্চয়ই তা আল্লাহ্‌র কাছে সহজ” (হজ্জ ৭০)। তিনি আরো এরশাদ করেন,

﴿وَمَا تَشَآءُونَ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢٩ ﴾ [التكوير: ٢٩]

“তোমরা আল্লাহ রব্বুল আলামীনের ইচ্ছার বাইরে কোনো কিছুই ইচ্ছা করতে পার না” (তাকভীর ২৯)। তাছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«احْفَظِ اللَّهَ يَحْفَظْكَ، احْفَظِ اللَّهَ تَجِدْهُ تُجَاهَكَ، إِذَا سَأَلْتَ فَاسْأَلِ اللَّهَ، وَإِذَا اسْتَعَنْتَ فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ، وَاعْلَمْ أَنَّ الأُمَّةَ لَوْ اجْتَمَعَتْ عَلَى أَنْ يَنْفَعُوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوكَ إِلاَّ بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ لَكَ، وَلَوْ اجْتَمَعُوا عَلَى أَنْ يَضُرُّوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَضُرُّوكَ إِلاَّ بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَيْكَ، رُفِعَتِ الأَقْلاَمُ وَجَفَّتْ الصُّحُفُ»

“আল্লাহ্‌র আদেশ-নিষেধের হেফাযত কর, তাহলে তিনি তোমাকে হেফাযত করবেন। আল্লাহ্‌র অধিকার রক্ষা কর, তাহলে তুমি তাঁকে তোমার সামনে পাবে। যখন কোনো কিছু চাইবে, তখন আল্লাহ্‌র কাছেই চাও। অনুরূপভাবে যখন সাহায্য প্রার্থনা করবে, তখন আল্লাহ্‌র কাছেই সাহায্য প্রার্থনা কর। জেনে রেখো, যদি পৃথিবীর সবাই একত্রিত হয়ে তোমার উপকার করতে চায়, তাহলে আল্লাহ যতটুকু লিখে রেখেছেন, তার চেয়ে সামান্যতম বেশী উপকার করতে পারবে না। পক্ষান্তরে যদি তারা সবাই একত্রিত হয়ে তোমার ক্ষতি সাধন করতে চায়, তাহলে আল্লাহ যতটুকু লিখে রেখেছেন, তার চেয়ে বেশী ক্ষতি করতে পারবে না। তাক্বদীরের লিখন শেষ হয়ে গেছে” (তিরমিযী, তিনি হাদীসটিকে ‘হাসান-সহীহ’ বলেছেন)। তিরমিযী ছাড়া অন্য বর্ণনায় এসেছে, “তুমি আল্লাহ্‌র অধিকার রক্ষা কর, তাহলে তাঁকে তুমি তোমার সামনে পাবে। তোমার সুখণ্ডস্বাচ্ছন্দের সময় আল্লাহকে চিনো, তাহলে কষ্ট-কাঠিন্যের সময় তিনি তোমাকে চিনবেন। জেনে রেখো, তাক্বদীরে যদি লেখা থাকে, তোমার কিছু ভুল হবে, তাহলে তা কখনই সঠিক হতে পারে না। পক্ষান্তরে তাক্বদীরে যদি লেখা থাকে, তোমার সঠিক কিছু হবে, তাহলে তা কখনই ভুল হতে পারে না। জেনে রেখো, ধৈর্য্যের সাথেই রয়েছে প্রকৃত বিজয়, দুঃখণ্ডকষ্টের সাথেই রয়েছে আনন্দ এবং জটিলতার সাথেই রয়েছে সহজতা”।

১৮: কবরে সুখ-শান্তির বিষয়টি কি কুরআন-সুন্নাহ্‌ দ্বারা প্রমাণিত?

হ্যাঁ, মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ ٱلنَّارُ يُعۡرَضُونَ عَلَيۡهَا غُدُوّٗا وَعَشِيّٗاۚ وَيَوۡمَ تَقُومُ ٱلسَّاعَةُ أَدۡخِلُوٓاْ ءَالَ فِرۡعَوۡنَ أَشَدَّ ٱلۡعَذَابِ ٤٦ ﴾ [غافر: ٤٦]

“সকালে ও সন্ধ্যায় তাদেরকে আগুনের সামনে পেশ করা হয়। আর কিয়ামতের দিন আদেশ করা হবে, ফেরাউন গোত্রকে কঠিনতর আযাবে দাখিল কর” (গাফির ৪৬)। অন্য আয়াতে এসেছে,

﴿يُثَبِّتُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِٱلۡقَوۡلِ ٱلثَّابِتِ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا وَفِي ٱلۡأٓخِرَةِۖ﴾ [ابراهيم: ٢٧]

“মহান আল্লাহ মুমিনদেরকে পার্থিব জীবনে এবং আখেরাতে মজবুত বাক্য দ্বারা অবিচল রাখেন” (ইবরাহীম ২৭)।

হাদীসে ক্বুদসীতে এরশাদ হয়েছে, “আসমান থেকে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দেন যে, আমার বান্দা সত্য বলেছে। অতএব, তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জান্নাতের পোষাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাত পর্যন্ত একটি দরজা খুলে দাও, যেদিক দিয়ে তার কাছে জান্নাতের সুবাতাস ও সুঘ্রাণ আসবে। আর যত দূর তার চোখ যায়, তত দূর পর্যন্ত তার কবরকে সম্প্রসারিত করা হবে। পক্ষান্তরে মৃত ব্যক্তি কাফের হলে সে ফেরেশতাদ্বয়ের প্রশ্নোত্তরে ব্যর্থ হবে। ফলে একজন ঘোষণাকারী এমর্মে ঘোষণা দিবেন যে, সে মিথ্যা বলেছে। অতএব, তার জন্য জাহান্নামেরর বিছানা বিছিয়ে দাও, তাকে জাহান্নামের পোষাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জাহান্নাম পর্যন্ত একটি দরজা খুলে দাও, যেদিক দিয়ে তার কাছে জাহান্নামের তাপ ও বিষ আসবে। আর তার কবরকে তার জন্য এমন সংকীর্ণ করা হবে যে, তার পাজরের হাড়-হাড্ডি একটা আরেকটার মধ্যে ঢুকে যাবে” (তিরমিযী, ‘সহীহ’)।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, “অতঃপর কাফেরের জন্য লোহার হাতুড়ি দিয়ে একজন অন্ধ এবং বধির ফেরেশতা নিযুক্ত করা হবে; ঐ হাতুড়ি দিয়ে যদি পাহাড়কেও মারা হয়, তবুও পাহাড় মাটি হয়ে যাবে। ফেরেশতা ঐ হাতুড়ি দিয়ে তাকে এমন আঘাত করবেন, মানুষ ও জিন ব্যতীত সবাই তার চিৎকার শুনতে পাবে। অতঃপর সে মাটির সাথে মিশে যাবে, তারপর তার মধ্যে আবার রূহ প্রদান করা হবে” (আবূ দাঊদ)।[1]

[1] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চোগলখোর ও পেশাব থেকে যে বেঁচে থাকত না তার সম্পর্কে বলেন, তারা দু’জন আযাব প্রাপ্ত হচ্ছে, (অর্থাৎ কবরে) তবে তারা বড় কোনো কিছুতে আযাব পাচ্ছে না। তাদের একজন পেশাব থেকে বেঁচে থাকতো না, অপরজন চোগলখুরী করত। [বুখারী]


১৯: কুরআন কি আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে নাযিলকৃত নাকি আল্লাহ্‌র সৃষ্ট?

কুরআন সৃষ্ট নয়; বরং তা আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে নাযিলকৃত। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী,

﴿ إِنَّا نَحۡنُ نَزَّلۡنَا عَلَيۡكَ ٱلۡقُرۡءَانَ تَنزِيلٗا ٢٣ ﴾ [الانسان: ٢٣]

“নিশ্চয়ই আমরা আপনার প্রতি কুরআনকে সুস্পষ্টভাবে অবতীর্ণ করেছি” (ইনসান ২৩)। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে,

﴿ إِنَّا نَحۡنُ نَزَّلۡنَا ٱلذِّكۡرَ وَإِنَّا لَهُۥ لَحَٰفِظُونَ ٩ ﴾ [الحجر: ٩]

“নিশ্চয়ই আমরা কুরআন অবতীর্ণ করেছি এবং আমরা নিজেরাই এর সংরক্ষক” (হিজর ৯)।

২০: আমল ছাড়া ঈমান কি কোনো কাজে আসবে?

একজন মুমিনের ভেতর অবশ্যই ঈমান এবং আমল উভয়ের সমন্বয় থাকতে হবে। প্রমাণ আল্লাহর বাণী,

﴿ وَمَن يَأۡتِهِۦ مُؤۡمِنٗا قَدۡ عَمِلَ ٱلصَّٰلِحَٰتِ فَأُوْلَٰٓئِكَ لَهُمُ ٱلدَّرَجَٰتُ ٱلۡعُلَىٰ ٧٥ ﴾ [طه: ٧٥]

“আর যারা ঈমানদার হয়ে এবং সৎকর্ম করে তাঁর কাছে হাযির হবে, তাদের জন্যই রয়েছে সুউচ্চ মর্যাদা” (ত্ব-হা ৭৫)। উক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ জান্নাতে প্রবেশের জন্য ঈমান এবং আমল উভয়ের শর্তারোপ করেছেন।


( সোর্স বাংলা হাসিদ )

Comments

Popular posts from this blog

6 Kalima in Bangla ortho o Uccharan Shoho | ৬ কালেমা বাংলা উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ সহ

৬ কালেমা বাংলা উচ্চারণ  6 Kalima কালিমা সমূহ  ৬ কলিমা আরবী ও বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ সহ এবং ঈমান-ই মুজমাল  ঈমান-ই মুজমাল সহ চলুন জেনে নেই 6 Kalima in Bangla(Bengali) ortho o Uccharan Shoho ৬ কালেমা বাংলা উচ্চারণ  সহ ইসলামিক সব গরুত্ব পর্ণ দুআ ও আমল সমূহ, এবং নবীদের জীবনী, ইসলামিক যুদ্ধের কাহিনী, জানতে আমাদের আপ্প  ডাউনলোড করুন Download App Now কালেমা কয়টি ও কি কি  কালিমা ৬ টি   (1) কালেমা-ই তাইয়্যেবা   (2). কালেমা-ই শাহাদৎ  (3)  কালেমা-ই তাওহীদ  (4.) কালেমা-ই রদ্দেকুফর  (5). কালিমা-ই তামজীদ  (6.) কালিমা আস্তাগফার ৬ কালেমা বাংলা উচ্চারণ 6 kalima in bangla 1. কালেমা-ই তাইয়্যেবা   بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ  لَا اِلَهَ اِلاَّ اللهُ مُحَمَّدُ رَّسُوْ لُ الله  বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।  কালিমা তায়্যিবা বাংলা উচ্চারণ  Kalima Tayyiba Bangla লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ । কালিমা তায়্যিবা অর্থ  আল্লাহ ব...

শীর্ষ 6 টি উপায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করার সহজ ও সঠিক উপায় | Top 6 Way Online Theke Taka Income Korar

কিভাবে অনলাইন থেকে সঠিক উপায়ে ও সহজে টাকা ইনকাম করা যায় শীর্ষ 6 টি উপায় Kivabe Taka income Korbo  Kivabe Taka income Korbo  Best Way Online Theke Taka Income Korar  অনলাইন ইনকাম অনলাইন থেকে কিভাবে সহজে টাকা  ইনকাম করা যায় অথবা অনলাইনে কিভাবে টাকা  আয় করা যায় এ ধরনের প্রশ্নগুলো বেশির ভাগ করা হয়ে থাকে ইন্টারনেটে। আপনি যখন এখানে এসেছেন তাহলে অবশ্যই আপনি নতুন এবং আপনি অনলাইন থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় সেটা জানতে চাচ্ছেন। অথবা শিখতে চাচ্ছেন তো আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে আপনাকে সঠিকভাবে গাইড করা। আপনি যদি মনে করে থাকেন যে আপনাকে কোন মোবাইলের অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার লিংক দেওয়া হবে। অথবা ওয়েবসাইটের লিংক দেওয়া হবে কাজ করার জন্য এবং সেটা থেকে আপনি 500 টাকা অথবা 1000 টাকা দৈনিক ইনকাম করবেন বিকাশে পেমেন্ট নেবেন তাহলে আপনি ভুল জায়গায়  চলে এসেছেন।  আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত যে আপনাকে হতাশ করা ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই  তবে যদি আপনি সমস্ত আর্টিকেলটা পড়েন তাহলে আশাকরি আপনার যত ভুল ধারণা আছে সেই সবগুলো আর থাকবে ন...

আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থ সহ ফজিলত | Allah 99 Name Bangla With Meaning And benefits in Bangla

  আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থ সহ ফজিলত, আল্লাহর নামসমূহ এর ফজিলত ও গুণাবলী আলোচনা করাহলো বিস্তারিত ভাবে আল্লাহর ৯৯ টি নামের সটিক হাদিস এর আলোকে আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা  আল্লাহর ৯৯ টি নামের আমল ও ফজিলত আল্লাহর ৯৯ টি নামের আমল ও ফজিলত সহ ইসলামিক সব গরুত্ব পর্ণ দুআ ও আমল সমূহ, এবং নবীদের জীবনী, ইসলামিক যুদ্ধের কাহিনী, জানতে আমাদের আপ্প  ডাউনলোড করুন Download App Now আল্লাহর ৯৯ নাম বাংলা অর্থ সহ ফজিলত  (১). ইয়া আল্লাহ ★★★ ফজিলত ★★★: যে ব্যক্তি রোজ এক হাজার বার ‘ইয়া আল্লাহ! পাঠ করবে, ইনশাআল্লাহ তার মন থেকে যাবতীয় সন্দেহ ও দ্বিধা দূরীভূত হয়ে যাবে এবং সে একীন ও দৃঢ়তা অর্জন করতে পারবে। কোন দূরারোগ্য রোগী যদি অত্যাধিক পরিমাণে ‘ইয়া আল্লাহ’ নিয়মিত পড়তে থাকে এবং পরে আরোগ্যের জন্য দোয়া করে, তা হলে সে আরোগ্য লাভ করবে। (২). আররাহমানু = নামের অর্থ - অসীম দয়ালু ★★★ ফজিলত ★★★:★★★ প্রত্যহ প্রতি নামাযের পরে একশ’বার এই নাম পাঠ করলে মন থেকে যাবতীয় কাঠিন্য ও অলসতা দূর হয়ে যাবে। (৩). আর-রাহীমু = নামের অর্থ - বড় মেহেরবান ★★★ ফজিলত ★★★ কেউ এ নাম প্রত্যহ নামাযান্তে একশ বার পাঠ করলে দুনিয়ার সমস্ত আপ...