Skip to main content

Salat ar Fojilot Bangla | সালাতের গুরুত্ব ও ভূমিকা রচনা, নামাজের ভূমিকা ও ফযিলত

 সালাতের গুরুত্ব ও ভূমিকা রচনা, নামাজের ভূমিকা ও ফযিলত


ভূমিকা:

আল্লাহ তা’আলা মানব জাতীকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। আর ইবাদতের মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হচ্ছে নামাজ । কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম আল্লাহ তা’আলা নামাজের হিসাব নিবেন। নামাজ না পড়া জাহান্নামে যাওয়ার কারণ। তাইতো রাসূল সা. বলেছেন, ইচ্ছাকৃত নামাজ পরিত্যাগ কারী জাহান্নামী কারণ ইচ্ছাকৃত নামাজ পরিত্যাগ কারা কুফুরী।


নামাজ একটি ফরজ এবাদত , এই ফরজ এবাদত আল্লাহর রাসূল সা. এর তরিকায় আদায় করতে হবে। কিন্তু দুক্ষজনক হলো মুসলমানরা ইচ্ছাকৃতভাবে আজকে নামাজের মত গুরুত্বপূর্ণ এবাদতকে ছেড়ে দিচ্ছে আর যারা নামাজ পড়ে তারাও নিজেদের মন মত নামাজ আদায় করে থাকে। সহীহ তরিকা শিখার চেষ্টাও করে না ।

অথচ রাসূল সা. বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যারা সুন্দরভাবে আদায় করে আল্লাহ তা’আলা তাকে পাঁচটি বিশেষ পুরুস্কার দান করে সম্মানিত করবেন।

(১) তার থেকে মৃত্যুও কষ্ট দূর করে দিবেন।
(২) কবরের শাস্তি থেকে তাকে মাফ করে দিবেন।
(৩) কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা তাকে ডান হাতে আমালনামা দান করবেন।
(৪) বিদ্যুাতের গতিতে ফুলসীরাত পার করবেন।
(৫) বিনা হিসাবে জান্নাত দান করবেন ।

অতএব সহীহ তরিকায় নামাজ কিভাবে পড়তে হয় তা শিখে নেওযা জরুরী । রাসূল সা. কে আল্লাহ তা’আলা জিব্রাইল আ. এর মাধ্যমে সহীহ তরিকার নামাজ পড়া শিখিয়েছেন। আর রাসূল সা. নিজেও হযরত জিব্রাইল আ. এর দেখানো তরিকায়ই সব সময় নামাজ পড়তেন । কারণ এটিই ছিল আল্লাহ তা’আলার শিখানো তরিকা।হযরত সাহাবায়ে কেরাম রা. রাসূল সা. কে যেভাবে নামাজ পড়তে দেখেছেন ঠিক সেভাবেই তারা নামাজ আদায় করেছেন। কারণ এটাই নামাজের বিশুদ্ধ তরিকা। সম্মানিত পাঠক আসুন কিভাবে সহীহ তরিকায় নামাজ আদায় করতে হয় তা আমরা জেনে নেই।আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে সুন্নতি তরিকায় সুন্দরভাবে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন আমীন।

নামাজের ফযিলত:

ইসলামে নামাযের গুরুত্ব অপরিসীম। নামায ইসলামের দ্বিতীয় রুকন, যা সুপ্রতিষ্ঠিত করা ব্যতীত মুসলমান হওয়া যায় না। নামাযে অবহেলা, অলসতা মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা মুতাবিক নামায পরিত্যাগ করা কুফরি, ভ্রষ্টতা এবং ইসলামের গণ্ডীবহির্ভূত হয়ে যাওয়া। 

সহীহ হাদীসে এসেছে

بين الرجل وبين الكفر والشرك ترك الصلاة

অর্থ: “মুমিন ও কুফর-শিরকের মধ্যে ব্যবধান হল নামায পরিত্যাগ করা”। (মুসলিম)
এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন:

العهد الذي بيننا وبينهم الصلاة فمن تركها فقد كفر

অর্থ: “আমাদের ও তাদের মধ্যকার অঙ্গীকার হল নামায। অত:পর যে ব্যক্তি তা পরিত্যাগ করবে সে কাফির হয়ে যাবে। হাদীসটি ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেছেন এবং বর্ণনাসূত্রের নিরিখে হাদীসটিকে হাসান (সুন্দর) বলেছেন।

নামায ইসলামের স্তম্ভ ও বড় নিদর্শন এবং বান্দা ও তার প্রতিপালকের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনকারী। সহীহ হাদীসে এর প্রমাণ।রাসূলুল্লাহ সা. বলেন:

إن أحدكُم إذا صَلَّى يُناجي ربَّه

অর্থ: “নিশ্চয়ই তোমাদের কেউ যখন নামায আদায় করে তখন সে তার প্রতিপালকের সাথে (মুনাজাত করে) নির্জনে কথা বলে। "

নামায বান্দা ও তার প্রতিপালকের মহব্বত এবং তাঁর দেওয়া অনুকম্পার কৃতজ্ঞতা প্রকাশের প্রতীক। নামায আল্লাহর নিকট অতি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার প্রমাণসমূহের একটি এই যে, নামায হল প্রথম ইবাদত যা ফরয হিসেবে পালনের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং মেরাজের রাতে, আকাশে, মুসলিম জাতির উপর তা ফরয করা হয়েছে। তা ছাড়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে, ‘কোন আমল উত্তম’ জিজ্ঞাসা করা হলে তার প্রত্যুত্তরে তিনি বলেছেন:

”الصلاة على وقتها“

অর্থ: “সময় মত নামায আদায় করা”। (বুখারী ও মুসলিম)।

নামাযকে আল্লাহ পাপ ও গুনাহ থেকে পবিত্রতা অর্জনের অসিলা বানিয়েছেন। হাদীসে এসেছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:


أرأيتُم لو أن نهراً بباب أحدكم يغتسل فيه كل يوم خمس مرات، هل يبقى من درنه شيء؟ قالوا: لا، قال: كذلك مثل الصلوات الخمس يَمْحُوا اللهُ بهنّ الخطايا

অর্থ: “যদি তোমাদের কারো (বাড়ীর) দরজার সামনে প্রবাহমান নদী থাকে এবং তাতে প্রত্যেক দিন পাঁচ বার গোসল করে, তাহলে কি তার (শরীরে) ময়লা বাকী থাকবে? (সাহাবীগণ) বললেন, ‘না’।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘অনুরূপভাবে আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের দ্বারা (বান্দার) গুনাহকে মিটিয়ে দেন’।

 (বুখারী ও মুসলিম)

এ বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে আরো হাদীস বর্ণিত হয়েছে:

أنه كان آخر وصيته لأمته، وآخر عهده إليهم عند خروجه من الدنيا أن اتّقوا الله في الصلاة وفيما ملكت أيمانُكم. (أخرجه أحمد والنسائي وابن ماجه)

অর্থ: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুকালে তাঁর উম্মাতের জন্য সর্বশেষ অসিয়ত (উপদেশ) এবং অঙ্গীকার গ্রহণ ছিল, ারা যেন নামায ও তাদের দাস-দাসীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করে।” 

(হাদীসটি ইমাম আহমাদ, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ বর্ণনা করেছেন)

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে নামাযের ব্যাপারে খুবই গুরুত্বারোপ করেছেন এবং নামায ও নামাযীকে সম্মানিত করেছেন। কুরআনের অনেক জায়গায় বিভিন্ন ইবাদতের সাথে বিশেষভাবে নামাযের কথা উল্লেখ করেছেন। নামাযকে তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।

এ বিষয়ে কয়েকটি আয়াত নিুরূপ:

حَافِظُواْ عَلَى الصَّلَوَاتِ والصَّلاَةِ الْوُسْطَى وَقُومُواْ لِلّهِ قَانِتِينَ

অর্থ “তোমরা সমস্ত নামাযের প্রতি যতœবান হও, বিশেষ করে (মাধ্যম) আসরের নামায। আর আল্লাহর সমীপে কাকুতি-মিনতির সাথে দাঁড়াও”।

 (সূরা আল বাকারাহ, আয়াত: ২৩৮)

وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ

অর্থ: “আর তুমি নামায সুপ্রতিষ্ঠিত কর। নিশ্চয় নামায অশালীন এবং অন্যায় কাজ থেকে বারণ করে”।

 (সূরা আল-আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ إِنَّ اللّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ

অর্থ: “হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।”

 (সূরা আল বাকারা , আয়াত: ১৫৩)

 إِنَّ الصَّلاَةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا

অর্থ: “নিশ্চয় নামায মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।” (সূরা আন নিসা, আয়াত: ১০৩) নামায পরিত্যাগকারীর জন্য আল্লাহর আযাব অপরিহার্য। ইরশাদ হয়েছে:

فَخَلَفَ مِن بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلَاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا

অর্থ: “অতঃপর তাদের পরে আসল এমন এক অসৎ বংশধর যারা সালাত বিনষ্ট করল এবং কুপ্রত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং তারা শীগ্রই জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে”।

 (সূরা মারয়াম, আয়াত: ৫৯) 

আল্লাহর বিধান অনুযায়ী, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের মাধ্যমে, তাঁর ক্রোধ ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে নামায সুপ্রতিষ্ঠিত করা ও সময়মত তা আদায় করা প্রতিটি মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য।

Comments

Popular posts from this blog

শীর্ষ 6 টি উপায় অনলাইন থেকে টাকা আয় করার সহজ ও সঠিক উপায় | Top 6 Way Online Theke Taka Income Korar

কিভাবে অনলাইন থেকে সঠিক উপায়ে ও সহজে টাকা ইনকাম করা যায় শীর্ষ 6 টি উপায় Kivabe Taka income Korbo  Kivabe Taka income Korbo  Best Way Online Theke Taka Income Korar  অনলাইন ইনকাম অনলাইন থেকে কিভাবে সহজে টাকা  ইনকাম করা যায় অথবা অনলাইনে কিভাবে টাকা  আয় করা যায় এ ধরনের প্রশ্নগুলো বেশির ভাগ করা হয়ে থাকে ইন্টারনেটে। আপনি যখন এখানে এসেছেন তাহলে অবশ্যই আপনি নতুন এবং আপনি অনলাইন থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় সেটা জানতে চাচ্ছেন। অথবা শিখতে চাচ্ছেন তো আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে আপনাকে সঠিকভাবে গাইড করা। আপনি যদি মনে করে থাকেন যে আপনাকে কোন মোবাইলের অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করার লিংক দেওয়া হবে। অথবা ওয়েবসাইটের লিংক দেওয়া হবে কাজ করার জন্য এবং সেটা থেকে আপনি 500 টাকা অথবা 1000 টাকা দৈনিক ইনকাম করবেন বিকাশে পেমেন্ট নেবেন তাহলে আপনি ভুল জায়গায়  চলে এসেছেন।  আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত যে আপনাকে হতাশ করা ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই  তবে যদি আপনি সমস্ত আর্টিকেলটা পড়েন তাহলে আশাকরি আপনার যত ভুল ধারণা আছে সেই সবগুলো আর থাকবে না। যদি মোবাইলের সফটওয়্যার ডাউনলোড করে সফটওয়্যার  দিয়ে অথবা ওয়েব স

6 Kalima in Bangla ortho o Uccharan Shoho | ৬ কালেমা বাংলা উচ্চারণ ও বাংলা অর্থ সহ

৬ কালেমা বাংলা উচ্চারণ  6 Kalima কালিমা সমূহ  ৬ কলিমা আরবী ও বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ সহ এবং ঈমান-ই মুজমাল  ঈমান-ই মুজমাল সহ চলুন জেনে নেই 6 Kalima in Bangla(Bengali) ortho o Uccharan Shoho ৬ কালেমা বাংলা উচ্চারণ  সহ ইসলামিক সব গরুত্ব পর্ণ দুআ ও আমল সমূহ, এবং নবীদের জীবনী, ইসলামিক যুদ্ধের কাহিনী, জানতে আমাদের আপ্প  ডাউনলোড করুন Download App Now কালেমা কয়টি ও কি কি  কালিমা ৬ টি   (1) কালেমা-ই তাইয়্যেবা   (2). কালেমা-ই শাহাদৎ  (3)  কালেমা-ই তাওহীদ  (4.) কালেমা-ই রদ্দেকুফর  (5). কালিমা-ই তামজীদ  (6.) কালিমা আস্তাগফার ৬ কালেমা বাংলা উচ্চারণ 6 kalima in bangla 1. কালেমা-ই তাইয়্যেবা   بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ  لَا اِلَهَ اِلاَّ اللهُ مُحَمَّدُ رَّسُوْ لُ الله  বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।  কালিমা তায়্যিবা বাংলা উচ্চারণ  Kalima Tayyiba Bangla লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ । কালিমা তায়্যিবা অর্থ  আল্লাহ ব্যাতিত/ ছাড়া কোন মাবুদ (এলাহ) নেই। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।  2. কালেমা-ই শাহাদৎ কালেমা শাহাদাত আরবি  بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ   اَشْ

Ayatul Kursi Bangla Anubad shoho, | আয়াতুল কুরসি বাংলা অনুবাদ সহ

Ayatul Kursi Bangla  আয়াতুল কুরসি বাংলা আয়াতুল কুরসী  বাংলায় অনুবাদ সহ আরবিতে পিকচার ও টেক্সট সহ দেয়া হলো আয়াতুল কুরসী  এমন এক আয়াত যার গোনাগন বলেশেষ করার মতো নয় তবে কিস ফজিলত ও গোনাগন উল্লেখ করা হলো জানার জন্য নিচে সম্পূর্ণ দেখোন Ayatul Kursi Bangla Ayatul kursi bangla  onubad shoho picture o text shoho deya holo Ayatul kursi  amon ak ayat jar gonagon boleshesh korar moto noy tobe kiso fojilot o gonagon ollekh kora holo janar jonno niche shompurno dekhon Ayatul kursi bangla  meaning Ayatul Kursi Bangla Anubad shoho, আয়াতুল কুরসি বাংলা অনুবাদ সোহো আয়াতুল কুরসী  আয়াতুল কুরসী (আরবি: آية الكرسي ‎) হচ্ছে পবিত্র কোরআন শরীফের দ্বিতীয় সুরা আল বাকারার ২৫৫তম আয়াতটি। এটি কোরআন শরীফের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ আয়াত এবং ইসলামিক বিশ্বের এটি ব্যাপকভাবে মুখস্ত করা হয়। এতে সমগ্র মহাবিশ্বের উপর আল্লাহর জোরালো ক্ষমতার কথা বর্ণনা করে। নবী মুহাম্মদ (সা•) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেহ পাঁচ ওযাক্ত নামাজের পর সঙ্গে সঙ্গে আয়তুল কুরসি পাঠ করবেন তার আর জান্নাতের মাঝে ব্যবধান থাকল মৃত্যু। অর্থাৎ মৃত্যু হলেই তিনি জা